উচ্চ কোলেস্টেরল একটি "নীরব ঘাতক" কারণ এটি সাধারণত চোখে পড়ার মতো কোনও উপসর্গ তৈরি করে না। তবে দীর্ঘ সময় ধরে কোলেস্টেরল জমে ধমনীতে ব্লকেজ তৈরি করে, যা হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। সাধারণত ২০০ এমজি বা তার বেশি কোলেস্টেরল মাত্রাকে উচ্চ কোলেস্টেরল ধরা হয়। যদিও রক্ত পরীক্ষাই এর সঠিক নির্ণয়ের একমাত্র উপায়, তবে কিছু বাহ্যিক লক্ষণও ইঙ্গিত দিতে পারে কোলেস্টেরল অতিরিক্ত মাত্রায় বেড়ে যাওয়ার। নিচে দেয়া হলো এমন ৬টি লক্ষণ, যেগুলো দেহ ও মুখে দেখা যেতে পারে।
১. চোখের পাতার চারপাশে হলদেটে প্যাচ বা ফোলা ভাব
চোখের চারপাশে ছোট ছোট হলদেটে চর্বিযুক্ত দাগ বা ফোলা ভাব দেখা গেলে তা হতে পারে উচ্চ কোলেস্টেরলের একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত। এগুলো সাধারণত ব্যথাহীন হলেও রক্তে অতিরিক্ত চর্বি জমে যাওয়ার লক্ষণ হতে পারে।
২. কর্নিয়ার চারপাশে ধূসর বা সাদা রিং
চোখের কর্নিয়ার (স্বচ্ছ অংশ) চারপাশে ধূসর বা সাদা রিং দেখা গেলে তা হতে পারে কর্নিয়াল আর্কাস। এটি বেশি বয়সীদের মধ্যে স্বাভাবিক হলেও যদি কম বয়সে (৪৫ বছরের নিচে) দেখা যায়, তবে তা উচ্চ কোলেস্টেরলের লক্ষণ হতে পারে।
৩. ত্বকে হলদেটে দানা বা ফুঁসকুড়ির মতো
চোখ, গাল, কনুই বা হাঁটুর আশেপাশে হলদেটে ছোট ছোট ফুঁসকুড়ির মতো দানা দেখা গেলে তা হতে পারে জ্যান্থোমাস। এগুলো সাধারণত ব্যথাহীন হলেও রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল বা লিপিডের কারণে হয়ে থাকে।
৪. ত্বকে হলদেটে ছোপ বা রঙ পরিবর্তন
ত্বকে বিশেষ করে মুখে বা চোখের চারপাশে হলদেটে ছোপ বা পিগমেন্টেশন দেখা গেলে তা জ্যান্থোডার্মা হতে পারে, যা উচ্চ কোলেস্টেরলের কারণে ত্বকে চর্বিযুক্ত পদার্থ জমার ফলাফল।
৫. ত্বকে নীলচে বা বেগুনি রঙের জালাকৃতি দাগ
কোলেস্টেরল এমবোলিজম ইঙ্গিতের কারণে রক্তনালিতে কোলেস্টেরলের খণ্ড আটকে গিয়ে ত্বকে নীল বা বেগুনি জালের মতো দাগ তৈরি হতে পারে। এটি রক্ত প্রবাহ ব্যাহত হওয়ার একটি সংকেত এবং তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রয়োজন।
৬. হঠাৎ করে ছোট ছোট গুটি বা ফুসকুড়ির মতো গুচ্ছ
যদি হঠাৎ মুখ, বাহু বা নিতম্বে ছোট ছোট লাল বা হলুদ গুটি গুচ্ছ আকারে দেখা যায়, তবে তা হতে পারে বিস্ফোরিত জ্যান্থোমাস। এটি সাধারণত রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে গেলে হয় এবং দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
পরামর্শ: এই লক্ষণগুলোর কোনওটি যদি আপনার মধ্যে দেখা যায়, তবে দেরি না করে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষা করিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে না থাকলে তা হৃদরোগের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া